বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক (জেনারেল) পদে নিয়োগের প্রস্তুতি যেভাবে নিবেন তা জানার জন্য সম্পূর্ণ লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক (জেনারেল) পদে নিয়োগ পরীক্ষাটি ইতিমধ্যে আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে। অনেকের মনে ভয়ও বাড়ছে। তরুণদের কাছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক (এডি) পদের চাকরিটা বেশ লোভনীয় এবং পছন্দেরও বটে।
শুরুতেই বড় পদ, ভালো বেতন, সময়মতো পদোন্নতি, ছুটি নিয়ে দেশের বাইরে পড়ার সুযোগ, সর্বোপরি তরুণ নেতৃত্বের পরিধি বাড়ানোর এই পদ ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আর মাত্র ২ সপ্তাহ বাকি। বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক পদে যোগদানের স্বপ্ন যাঁদের, তাঁদের স্বপ্নজয়ের ১ম ধাপ বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তর বা MCQ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ নভেম্বর সকাল ১০টায়।
১০০ নম্বরের ১ ঘণ্টার পরীক্ষা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক (জেনারেল) পদে নিয়োগের প্রস্তুতি যেভাবে নিবেন:
প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়ে জানিয়েছেন ব্যাংকের উপপরিচালক নাজমুল হুদা স্যার। তার বর্ণিত পরামর্শগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো:
- প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ৬০ মিনিট সক্রিয় থাকা জরুরি।
- মাথা ঠান্ডা রেখে টিকে থাকতে পারলে নম্বর আসবেই।
- ক্রিকেটে সব বল খেলতে চাওয়ার মতো MCQ প্রশ্নে সব বৃত্ত ভরাট করতে যাওয়া বোকামি।
- ভুল উত্তরের জন্য নম্বর কর্তনের
- বিধান থাকায় শুরু থেকেই সতর্ক থাকুন, উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে সংযমী হোন।
- দিনের শুরুতেই বাংলাদেশ ব্যাংকের পরীক্ষা। তাই সতেজ মনে হলে প্রবেশ করার চেষ্টা করুন।
- ঢাকার বাইরে থেকে যাঁরা আসবেন, তাঁরা হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে রওনা দিন; পর্যাপ্ত বিশ্রামের ব্যবস্থা রাখুন। অন্তত এক ঘণ্টা আগে পরীক্ষার হলে পৌঁছানোর চেষ্টা করুন।
- কোনোভাবেই যেন ঝিমুনি, অস্থিরতা বা চিন্তা জট তৈরি না হয়।
- পরীক্ষার হলে সময় সচেতনতা, তাত্ত্বিক বুদ্ধিমত্তা, সার্বক্ষণিক মনোযোগ ও মনোবল ধরে রাখা জরুরি।
- বাড়তি বইপত্র, নোট, খাতা, স্মার্টফোন, ক্যালকুলেটর প্রভৃতি বয়ে নিয়ে পরীক্ষার আগমুহূর্তে মস্তিষ্কে চাপ বাড়াবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
- এমসিকিউ পরীক্ষার ক্ষেত্রে কত কিছু পড়েছেন, তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ মাথা ঠান্ডা রেখেকতটা প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারছেন।
- কতসংখ্যক পরীক্ষার্থী অংশ নেবেন, ‘কাট মার্ক’ কত হবে, এসব হিসাব–নিকাশ আলাপন থেকে আপাতত বিরত থাকুন।
- নিজের ওপর সর্বোচ্চ আস্থা রেখে শেষ কয়টা দিনে প্রয়োজনে পড়াশোনার পরিধি কমিয়ে আয়ত্তে আনার চেষ্টা করুন।
- নিজের মতো রুটিন নিতে পারেন।
- বিশেষ কোনো বিষয়ে দুর্বলতা থাকলে বাড়তি সময় দিন।
- বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান ও কম্পিউটার প্রযুক্তি—যে অংশের ওপর আপনার দখল ভালো শুরু করুন সেখান থেকেই।
- প্রতিটি প্রশ্নের মান যেহেতু সমান, তাই সবার আগে বিবেচনায় নিতে হবে নিজের পছন্দ ও পারদর্শিতা।
- পরীক্ষার সময় আগে সহজ ও জানা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সময় সাশ্রয় করতে পারেন।
- আনুপাতিকভাবে গণিতে বেশি সময় লাগে। গণিত ও অ্যাপটিটিউড টেস্ট মিলে এ অংশে মোট ৩০টি প্রশ্ন থাকে।
- সাধারণ গণিতের পাশাপাশি গাণিতিক বিশ্লেষণী ক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য অ্যাপটিটিউড টেস্ট অংশে গ্রাফ, ছক, টেবিল বা বর্ণনা দেওয়া থাকে, তা থেকে উত্তর দিতে হয়।
- আপনার প্রস্তুতি যেমনই থাক, গণিতে অনেক প্রশ্ন পাবেন যেগুলো সাধারণ মানের, সহজসাধ্য। জটিল বা অপরিচিত অঙ্ক নিয়ে মাথা ঘামিয়ে সময় নষ্ট না করে ছেড়ে দিতে পারেন।
- বাংলা–ইংরেজি উভয় অংশ থেকেই ২০টি করে প্রশ্ন আসে।
- বাংলার ক্ষেত্রে সাহিত্য অংশ থেকে অর্ধেকসংখ্যক প্রশ্ন আসলেও ইংরেজিতে সমার্থক শব্দ, বিপরীত শব্দসহ ব্যাকরণ অংশের প্রাধান্য থাকে।
- বাংলায় বানান বা বাক্য শুদ্ধিকরণ, প্রবাদ–প্রবচন, বাগধারা, সন্ধি, সমাস, প্রকৃতি ও প্রত্যয়, এককথায় প্রকাশ থেকেও প্রশ্ন আসে।
- কম্পিউটার প্রযুক্তি অংশ থেকে ১০টি প্রশ্ন থাকে। অনেকেই এই অংশটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন।
- বিষয়ভিত্তিক একাডেমিক পড়াশোনা ছাড়া এ অংশে ভালো করা সম্ভব। নির্দিষ্ট কিছু বিষয় ভালোভাবে আয়ত্ত করতে পারলে যে কেউ এ অংশে পূর্ণ নম্বর পেতে পারেন।
- বিগত পাঁচ বছরের প্রশ্ন সমাধান অনুশীলন করলে ভালো ফল পাবেন। শেষবারের মতো চোখ বুলিয়ে যান।
- সাধারণত সাধারণ জ্ঞান অংশ থেকে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি মিলে ১০টি প্রশ্ন থাকে। এ অংশে ভালো করতে দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতি নিতে পারলে ভালো। না হলেও ভয়ের কিছ নেই।
- সমসাময়িক নানা বিষয়, চলতি ঘটনা নিয়ে সম্যক ধারণা থাকলে পরীক্ষায় কাজে আসবে।
- প্রায় একই রকম চারটি উত্তর দেখে দ্বিধান্বিত হয়ে ভুল উত্তর দেওয়ার প্রবণতা রোধ করতে পারলে ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব। সবার জন্য শুভকামনা রইলো।